নওগাঁর রাণীনগরে বোরোধান কাটা শুরু
প্রকাশিত : 10:00 PM, 17 April 2021 Saturday

অনলাইন ডেস্ক:নওগাঁর রাণীনগরে চলতি মৌসুমের বোরো ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। এবার ধান লাগানোর শুরু থেকে বৃষ্টিপাত না হলেও গত সপ্তাহে হঠাৎ করে ঝড়ো হাওয়া আর শীলা বৃষ্টিতে ধান চাষিদের কিছুটা উৎকণ্ঠার মধ্যে ফেললেও শেষ মুহূর্তে কিছু আগাম জাতের ধান পাকতে শুরু করায় গতকাল শুক্রবার উপজেলার হরিশপুর মাঠে এই মৌসুমেরে প্রথম বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।কৃষি বিভাগ বলছে, প্রায় ৪০শতাংশ ধান কাটা মাড়াইয়ের উপযোগী হয়েছে। আগামী সপ্তাহ শেষে এই এলাকায় পুরোদমে ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে। বাজার মূল্য ভালো থাকায় দিনদিন চাষিরা বোরো ধান চাষের দিকে মনোযোগ বেশি দিচ্ছে। ফলন ভাল এবং বাজারদর বেশি পাওয়ার আশায় কৃষকরা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছে। প্রতি বছর এই সময় দেশের দক্ষিণ অঞ্চল বিশেষ করে ভেড়ামারা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, পোড়াদহসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ধান কাটা শ্রমিক আসতো। করোনাকালীন পুরো লকডাউন আর ধান পাকার দেরির কারণে সেই সব এলাকার শ্রমিকগুলো এখনো আসতে শুরু করেনি। তবে চাষিরা নিজনিজ উদ্যোগে ধান কাটার শ্রমিকদের সাথে রীতিমতো যোগাযোগ রাখছে।উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে দিগন্ত জুড়ে পাকা ধানের সোনালি রঙের ঝিলিক ছড়াচ্ছে। যতদূর চোখ যায় শুধু পাকা ধানের সোনালি রঙের চোখ ধাঁধানো দৃশ্য। মাঠ জুড়ে পাকা ধান বলে দিচ্ছে গ্রাম বাংলার কৃষকের মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ইরি-বোরো ধান চাষের দৃশ্য।চলতি মৌসুমে ইরি-বোরো ধানের ভাল ফলনের বুকভরা আশা করছে কৃষকরা। বাজারে নতুন ধানের আমদানি এখনো না হওয়ায় কেনা-বেচা শুরু হয়নি। চাষিরা আশা করছে পুরো ধান কাটা মৌসুমে বাজার দর ভালো পাবো।রাণীনগর কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ১৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সঠিক সময়ে চারা লাগানো, নিবিড় পরিচর্যা, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ, যথা সময়ে সেচ দেওয়া, সার সংকট না থাকায় উপজেলার কৃষকরা জিরাশাইল, খাটো-১০, বিআর-২৯, স্বর্ণা-৫ জাতের ধান চাষ করেছেন। নতুন ধান কাটার শুরুতেই বিঘা প্রতি ২০/২২ মন হারে ধান উৎপাদনের আশা করা যাচ্ছে। নওগাঁর ছোট যমুনা নদী বেষ্টিত নিম্নাঞ্চল হওয়ায় ঊর্বরা পলি মাটির জমিতে ইরি-বোরো ধান ব্যাপক আকারে চাষ হয়েছে। এছাড়াও রক্তদহ বিল, বিল মুনসুর, বিল চৌর, সিম্বা, খাগড়া, আতাইকুলা, হরিশপুর, মেরিয়া, মিরাট, গোনা, একডালা, কালীগ্রাম, রাতোয়াল, ভাটকৈ মাঠে সরজমিনে ঘুড়ে দেখা গেছে পাকা ধানের সোনালি রঙের আভাস। কিছু এলাকায় ধানের রোগ-বালাই আংশিক দেখা দিলেও তা পরিমাণে অনেক কম। তারপরও স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্তা ব্যক্তিরা সরকারি ছুটি বাতিল করে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের জমিতে গিয়ে নানান ধরণের পরামর্শ দিচ্ছেন। তাদের পরামর্শে আক্রান্ত জমিতে নানান ধরণের ওষুধ ছিটিয়ে রোগ-বালাই নিরাময়ের চেষ্ঠা চালাচ্ছেন। কৃষি বিভাগ বলছে, শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে কৃষকরা বাম্পার ফলন পাবে।উপজেলার হরিশপুর গ্রামের কৃষক আয়েত আলী ও আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা এবছর ৮ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। কৃষি বিভাগের পরামর্শে যথা সময়ে ভাল পরিচর্যা করায় আমার জমিতে ধান ভাল হয়েছে। ইতিমধ্যেই ধান কাটা শুরু করেছি ধানের ফলন ভাল হবে বলে আশা করছি।রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, কয়েকটি ইউনিয়নে কিছু কিছু এলাকায় ধান পেকেছে। আগামী দশ দিনের মধ্যে পুরো ধান পেকে যাবে। শেষ মুহূর্তে আবহাওয়া ভালো থাকলে চাষিরা বাম্পার ফলনসহ দাম ভালো পাবেন। গত বছরে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় চলতি বোরা মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষিরা বেশি পরিমাণ জমিতে ধান রোপণ করেছেন।
শেয়ার করে সঙ্গে থাকুন, আপনার অশুভ মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নয়। আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক বাংলার সকাল'কে জানাতে ই-মেইল করুন- banglarsakal24@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
দৈনিক বাংলার সকাল'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।